হঠাৎ উত্তপ্ত রাজনীতি: মুখোমুখি দু’দল

ঠাৎ করেই রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সংসদের বাইরে থাকা বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি এবার মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। দুই দলের শীর্ষ নেতারাই ইতিমধ্যে ৭ নভেম্বরকে ঘিরে শক্তির মহড়া দেখাতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যেকোনো মূল্যে ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবসে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছেন। উল্টোদিকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বিএনপিকে প্রতিরোধ করারও ঘোষণা দিয়েছেন। এ নিয়ে দু’দলসহ দেশের পুরো রাজনৈতিক অঙ্গন নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।

এ বিষয়ে পূর্বপশ্চিমের সঙ্গে আলাপকালে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান সোমবার রাতে বলেন, ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস বলে জাতীয় জীবনে কোন দিবস নেই। ছলচাতুরী করে মেজর জিয়া তৎকালীন সেনা সদস্যদের বিভ্রান্ত করে ক্ষমতা গ্রহণ করেছিল। জাতীয় জীবনে এরকম কালো দিন খুব কমই এসেছে। এমন একটি দিবস পালনের নামে জাতির সঙ্গে প্রতারণা করতে দেয়া হবে না। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যা বলেছেন তাই ঠিক। বিএনপিকে উল্টাপাল্টা কিছুই করতে দেয়া হবে না। রাজপথে নেমে আবারো মানুষকে পুড়িয়ে মারতে দেয়া হবে না।’

এদিকে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সোমবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘এই সরকার দেশের গণতান্ত্রিক সম্ভাবনা বিনষ্ট করে ফেলেছে। মানুষের অধিকারগুলো কেড়ে নিয়েছে। তারা দেশকে এক গভীর গহবের দিকে ঠেলে দিয়েছে। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে কখনোই কোনো অবস্থাতে সমঝোতা করবো না। যে গণতন্ত্র লুট হয়েছে, জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও আমরা তা ফিরিয়ে আনবোই। ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও গণসংহতি দিবসে গণতন্ত্রের দাবিতে জনগণ রাস্তায় নেমে আসবে। যেকোনো মূল্যে বিএনপি সমাবেশ করে দেখাবে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম টেলিফোনে মাহবুব আলম হানিফের সমাবেশ প্রতিরোধের ঘোষণার বিষয়ে জানতে চাইলে পূর্বপশ্চিমকে বলেন, আওয়ামী লীগ যে গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না সেটির প্রমাণ হলো এ ধরণের হুমকি দেয়া। বিএনপি দেশে গণতন্ত্রের চর্চা করে। গণতান্ত্রিক যেকোনো দলের অধিকার আছে সমাবেশ করার। বিএনপির সমাবেশে বাঁধা এলে তা প্রতিরোধ করা হবে।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ টেলিফোনে পূর্বপশ্চিমকে বলেন, ‘দেশের সাধারণ জনগণ মিথ্যা বিপ্লব ও গণসংহতি দিবস পালন করতে দেবে না। আওয়ামী লীগ নয়; সাধারণ মানুষ বিএনপির নৈরাজ্য থেকে বাঁচতেই এমনটা করবে। ৭ নভেম্বরে হাজারো মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছিল। এসব খুনিরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছে। দেশের মানুষ ইতিহাস ভুলে যায়নি। বিএনপি কোনকালেই গণতন্ত্রের চর্চা করেনি। গণতন্ত্রের বুলি তাদের মুখে মানায় না।’

এদিকে, সম্প্রতি কয়েকটি অনুষ্ঠানে বিএনপির পক্ষ থেকে দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, নভেম্বর আসলেই বুঝতে পারবেন-বিএনপির শক্তি কতটা রয়েছে। শক্তি প্রদর্শন করে হলেও ৭ নভেম্বরে সমাবেশ করতে চায় বিএনপি। একই কথা বলেছেন বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস।

ফলে, বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে হঠাৎ করেই আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনীতি। দুদলই শক্তি প্রদর্শনের মহড়া দিতে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর